মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহ বিস্তারিত । molwa.gov.bd

প্রিয় পাঠক BDEducationLife.Com আজকে আপনাদের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহ সহ সাল অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে মুক্তিযুদ্ধের বিবরণ তুলে ধরবে। একজন সচেতন নাগরিক বা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে অবশ্যই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহ গুলো বিস্তারিত জানা দরকার।

বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের বা চাকুরী পরিক্ষার্থীদের জন্য আজকের এই পোসটি অনেক কাজে আসবে।

মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহ

মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহ গুলো এমন ভাবে সাজানো হয়েছে যাতে সহজে সকল তথ্য স্বরণ থাকে।

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস (সংক্ষিপ্ত) : বাঙ্গালী জাতী তথা আমাদের জাতীয় ইতিহাসের সর্ব শ্রেষ্ঠতম অধ্যায় হচ্ছে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ। এই মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পৃথিবীর মানচিত্রে জন্মলাভ করে স্বাধীন একটি দেশ। তার নাম বাংলাদেশ।

bn.wikipedia.org তথ্য অনুযায়ী ১৯৭১ সালে পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তান সংঘঠিত সশস্ত্র সংগ্রামে মাধ্যমে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন মানচিত্র আত্মপ্রকাশ ঘটে। ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ (সার্চ লাইট) কালে রাতে পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। এখান থেকেই শুরু হয় গেরিলাযুদ্ধ বা স্বাধীনতার যুদ্ধের সূচনা।

১৯৭০ সালে স্ধারণ নির্বাচনে সবচেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রাপ্ত আওয়ামীলীগ দলের প্রধান এবং বর্তমান বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। এর পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়াউর রহমান (পূর্ব বেঙ্গল রেজিমেন্টের উপ প্রধান ছিলেন) ও এম.এম হান্নান (চট্টগ্রাম আওয়ামীলীগ নেতা) স্বাধীনতার ঘোষণা করেন।

এর পর শুরু হয় ০৯ মাস মুক্তিযুদ্ধ। অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। এই জন্য প্রতি বছর ১৬ ডিসেম্বর দিনটিকে “বিজয় দিবস” হিসেবে পালন করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহ আলোচনা:

সুসংগঠিত সেনা কমান্ডের জন্য ১৯৭১ সালে ২৯ এপ্রিল মন্ত্রী পরিষদ সভার বৈঠকে ০১টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আর তা হলো: “সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে সিদ্ধান্ত হল যে প্রধান সেনাপতি অফিসারদের একটি তালিকা প্রস্তুত করবেন। সেনা কমান্ডকে সমন্বিত করে কঠোর শৃংখলার মধ্যে আনতে হবে। বাংলাদেশ বাহিনীতে প্রশিক্ষণার্থীদের বাছাইপর্বে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।”

মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সমূহ বিস্তারিত তথ্য:

সেক্টর-০১

দায়িত্বে ছিলেন: মেজর রফিকুল ইসলাম

এরিয়া: চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার ফেনী মহকুমার অংশ বিশেষ (মুহুরী নদীর পূর্বপাড় পর্যন্ত)।

সাব-সেক্টর-০৫টি।

সেক্টর ট্রুপস্ -২১০০ সৈন্য ও গেরিলা ২০,০০০ ছিল।

সেক্টর-০২

দায়িত্বে ছিলেন: মেজর খালেদ মোশাররফ

এরিয়া: কুমিল্লা জেলার অংশ, ঢাকা জেলা ও ফরিদপুর জেলার অংশ।

সাব সেক্টর: ০৬টি।

সেক্টর ট্রুপস্ – ৪,০০০ সৈন্য ও গেরিলা  ৩০,০০০ জন ছিল।

সেক্টর-০৩

দায়িত্বে ছিলেন: মেজর কে এম শফিউল্লাহ

এরিয়া: কুমিল্লা জেলার অংশ, ময়মনসিংহ জেলার অংশ, ঢাকা ও সিলেট জেলার অংশ।

সাব-সেক্টর: ০৭টি।

সেক্টর ট্রুপস্- ৬৬৯৩ সৈন্য ও গেরিলা ২৫,০০০ জন ছিল।

সেক্টর-০৪

দায়িত্বে ছিলেন: মেজর সি আর দত্ত

এরিয়া: সিলেট জেলার অংশ।

সাব-সেক্টর-০৬টি।

সেক্টর ট্রুপস্- ৯৭৫ সৈন্য ও গেরিলা ৯,০০০ জন ছিল ।

সেক্টর-০৫

দায়িত্বে ছিলেন: মেজর মীর শওকত আলী

এরিয়া: সিলেট জেলার অংশ ও ময়মনসিংহ জেলার অংশ।

সাব-সেক্টর-০৬টি।

সেক্টর ট্রুপস্ – ১৯৩৬ সৈন্য ও গেরিলা  ৯,০০০ জন ছিল।

সেক্টর-০৬

দায়িত্বে ছিলেন: উইং কমান্ডার এম খাদেমুল বাশার

এরিয়া: রংপুর জেলা ও দিনাজপুর জেলার অংশ।

সাব-সেক্টর-০৫টি।

সেক্টর ট্রুপস্- ২৩১০ সৈন্য ও গেরিলা  ১১,০০০ জন ছিল।

সেক্টর-০৭

দায়িত্বে ছিলেন: মেজর নাজমুল হক

এরিয়া: রংপুর জেলার অংশ, রাজশাহী জেলার অংশ, পাবনা জেলার অংশ ও দিনাজপুর জেলার অংশ, বগুড়া জেলা।

সাব-সেক্টর-০৯টি

সেক্টর ট্রুপস্ -২৩১০ সৈন্য ও গেরিলা ১২,৫০০ জন ছিল ।

সড়ক দুর্ঘটনায় সেপ্টেম্বর মাসে মেজর নাজমুল হক নিহত হওয়ার কারণে পরবর্তিতে লেঃ কর্নেল কাজী নুরুজ্জামান সেক্টর-০৭ অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন।

সেক্টর-০৮

দায়িত্বে ছিলেন: মেজর আবু ওসমান চৌধুরী

এরিয়া: যশোর জেলা, ফরিদপুর জেলা, কুষ্টিয়া জেলা, খুলনা ও বরিশাল জেলার অংশ।

সাব-সেক্টর-০৭টি।

সেক্টর ট্রুপস্ – ৩৩১১ সৈন্য ও গেরিলা ৮,০০০ জন ছিল ।

লেঃ কর্নেল এম আবুল মঞ্জর ১৮ই আগস্ট  সেক্টর-০৮ এর অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন।

সেক্টর-০৯

দায়িত্বে ছিলেন: মেজর আবদুল জলিল

এরিয়া: বরিশাল জেলার অংশ, পটুয়াখালী জেলা, খুলনা, ফরিদপুর জেলার অংশ।

সাব-সেক্টর-০৩টি।

সেক্টর ট্রুপস্- ৩৩১১ সৈন্য ও গেরিলা ৮,০০০ জন ছিল ।

সেক্টর-১০

দিয়েত্বে ছিলেন: প্রধান সেনাপতির নিয়ন্ত্রণে (নৌ সেক্টর)

এরিয়া: (নৌ সেক্টর) সমগ্র বাংলাদেশ।

সেক্টর-১০ গঠিত হয়েছিল নৌ-কমান্ডোদের দিয়ে।

নৌ-কমান্ডোর সংখ্যা: ৫১৫ জন।

দেশের বিভিন্ন নদী বন্দর ও শক্র পক্ষের নৌ-যানগুলোতে অভিযান চালানোর জন্য এঁদের বিভিন্ন সেক্টরে পাঠানো হতো।

সেক্টর-১১

দায়িত্বে ছিলেন: মেজর আবু তাহের

এরিয়া: ময়মনসিংহ জেলার অংশ, সিলেট জেলার অংশ ও রংপুর জেলার অংশ।

সাব-সেক্টর-০৭টি।

সেক্টর ট্রুপস্- ২৩১০ সৈন্য ও গেরিলা ২৫,০০০ জন ছিল ।

পরবর্তীতে ১৪ নভেম্বর মেজর আবু তাহের আহত হওয়ার পর এই সেক্টরের দায়িত্ব কাউকেও দেয়া হয়নি। (সকল তথ্য www.dhaka.gov.bd থেকে সংগ্রহ করা)

 

এক নজরে মুক্তিযুদ্ধের তথ্য (সাল অনুযায়ী)

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন।

১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট সাধারণ নির্বাচন

১৯৫৬ সালে চূড়ান্তভাবে বাংলাকে উর্দূর পাশাপাশি সংবিধানে অন্যতম প্রধান জাতীয় ভাষা হিসেবে গ্রহণ করা হয়।

১৯৫৮ সালে ৭ই অক্টোবর পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি।

১৯৬২ সালের শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন।

ছাত্র সমাজের ২২ দফা দাবিকে কেন্দ্র করে ১৭ই সেপ্টেম্বর ১৯৬৩ সালে ‘শিক্ষা দিবস’ পালনের জন্য সারাদেশে দুর্বার আন্দোলন গড়ে ওঠে।

১৯৬৬ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারী শেখ মুজিবর রহমান ৬ দফা দাবী উপস্থাপন

১৯৬৭ সালে ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তান সরকার এর সামরিক ও বেসামরিক ২৮ জনকে গ্রেফতার করে।

১৯শে জুন ১৯৬৮ পাকিস্তান সরকার শেখ মুজিবর রহমানসহ ৩৫ জনকে গ্রেফতার করে এক রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দায়ের করে। এই মামলা ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’ নামে পরিচিত।

১৯৬৯ এর গণ-আন্দোলন।

১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচন। আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ লাভ।

বঙ্গবন্ধু ১লা মার্চ ১৯৭১ দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলন আহবান।

২রা মার্চ ১৯৭১ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের পতাকা প্রদর্শিত হয়।

৩রা মার্চ ১৯৭১ এ রমনা রেসকোর্স (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে) ‘স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’ এর পক্ষ থেকে ‘স্বাধীনতার ইসতেহার’ পাঠ করা হয়।

৭ই মার্চ ১৯৭১ বঙ্গবন্ধু রহমান রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বঙ্গবন্ধুর ভাষণ।

২৩শে মার্চ ৭১ সকালে পল্টন ময়দানে জয় বাংলা বাহিনীর এক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।

২৫শে মার্চ ৭১ রাত্র ১১টায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী অতর্কিত ভাবে বাঙ্গালীদের উপর আক্রমণ (গণহত্যা)।

২৬ মার্চ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা।

১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ বাংলাদেশ শতরু মুক্ত হয়।

(সকল তথ্য www.dhaka.gov.bd থেকে সংগ্রহ করা)

অন্যান্য তথ্যর জন্য আমাদের ফেসবুক পেজ লাইক দিয়ে সাথেই থাকুন… ফেসবুক পেজ

মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর সদর দপ্তর, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর ম্যাপ, মুক্তিযুদ্ধের সাব সেক্টর কতটি, মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকা কত নম্বর সেক্টরে ছিল, মুক্তিযুদ্ধের ১১ নং সেক্টর, মুক্তিযুদ্ধের ৩ নং সেক্টর, মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর মানচিত্র, মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা কোন সেক্টরে ছিল, মুক্তিযুদ্ধে রংপুর কোন সেক্টরে ছিল, মুক্তিযুদ্ধে দিনাজপুর কোন সেক্টরে ছিল, মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী কোন সেক্টরে ছিল 

Leave a Reply

Your email address will not be published.

Back to top button